Wednesday, June 17, 2009

রক্তের বিনিময়ে খাদ্য!

খুব ইচ্ছা আমার রক্ত ডোনেট করার। গিয়েছিলাম রক্ত দিতে অফিস থেকে মার্চ, ২০০৯। আমার আইরন দেখার পর আমাকে রেডি করে হাতের ভেইন খুঁজে বেটি। পায়নাই মহিলা ভয় পেয়ে যাই। আর না দেখে ও ডাকে অন্যজনকে। আবারো রিচেক করার পর এইবার ওরা ভীষন ভাবে বিভ্রান্ত। বাম হাতে একবার চেষ্টা করল সুঁই দিয়ে কিন্তু ভেইন পেলোনা রক্তের স্রোত নেই। আবার চেষ্টা করল ডান হাতে আমি উফ! করে উঠি। সরি বলে আবার যখন সুঁই ঢুকালো এইবার মনে করেছিলাম হবে, কিন্তু হলনা...হতাস হলাম রক্ত আসছেনা। এক ফোটা দু'ফোটা। এরপর লোকটা লাস্ট ট্রাই বলে বাম হাতে দিল ভেইন খুঁজে। হাইরে আল্লাহ আমার পরীক্ষা শেষ হল। তবে এইবারো ওরা ভুল জায়গাই ছুরি চালিয়েছে। গাধা কতগুলা। আমাকে সাজেকসন করল প্রচুর পরিমান পান করার জন্য জুস, পানি ইত্যাদি। আমিও নিরাশ হয়ে ফিরে যাই অফিসে। পরেরদিন হাত ফুলে যাই প্রচন্ড ব্যাথা। হাত নারাতে পারিনা। কাজে যাই কিন্তু খুব পেইন। পেইন কিলার খেলাম। কাজ হলনা। ভয় পেয়ে যাই। বাসার সবাই বকা দেয়। আমার কিছু বলার থাকেনা। চুপচাপ সয়ে যাই। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে আসে।

আজ জুন মাসের ১৭ তারিখ, ভাবী পরিক্ষার হলে আমার হাতে অনেক সময় কি করব বুঝতে পারছিলাম না। কলেজ থেকে বের হতেই দেখলাম বড় করে লেখা ডোনেট ব্লাড। দেখে খুব ইচ্ছে হল হে আমি রক্ত দিব। গেলাম বাসের মদ্ধে ঢুকে পরি। অনেক ছেলে রক্ত দিচ্ছে। আবারো সেই মার্চের মত করে বসেছিলাম, এক লোক এসে ডাকল। ইনফরমেসন নিল। এরপর সিস্টেমে দেখল যে আমার হাতে অনেকবার গুতাগুতি করার পরও ওরা মার্চে ভেইন বের করতে পারেনি। যদি আবার ফিরে আসি যেন কয়েকবার সুঁই ঢুকানোর আগে ভেইন কোথাই আছে, নাকি নাই সেটা যেন দেখে। কথাটা শুনে অবাক। আইরন চেক করার পর বললাম দেখ আমি খুবি আগ্রহি রক্ত দেয়ার জন্য তুমি প্লিস না করিওনা। আমার হাতের ভেইন আছে সেটা তুমি এক্তু ভাল করে দেখ। লোকটা এলে পরে আমাকে রেডি করে...হাতে এক্তা স্পংজ দিল। প্রেস করতে বলে অনেক্ষন, আর তখনি ও একবার দেখতেই বের করে ফেলে। "um here is a good vein" আমার আনন্দের সীমা নেই। সঙ্গে সঙ্গে বলি যে আর দেরি কেন। চেষ্টা কর...দেখতে না দেখতে এক ইউনিট রক্ত চলে গেল বেগে। আমি অবাক হলাম আমার রক্ত দেখে কি যে ঘাঢ়!! এক্তু কালচে ধরনের পাতলা না...

রক্ত দেয়ার সময় লোকটা অনেক হেল্পফুল ছিল। বার বার জিজ্ঞেস করছিল আমি ঠিক আছি কিনা। অর হাত অনেক পাতলা ছিল্ল। একদম বুঝতে পারিনি কখন সে দিল আর নিল। বার বার আমার ইচ্ছে কে প্রাধান্ন দিচ্ছিল। যাই হোক আমার খুব ভালো লাগলো। কিছু একটা করতে পেরেছি। পর পর আমাকে আপেল জুস দিল, মুভি টিকেট আর পিজা। আমি এক্তু সোঙ্কচিত হলাম। জিজ্ঞেস করলে কেন? উত্তর দেই এইগুল দেই ছেলে পেলে যেন আসে কিছু পেতে তাতে কিছু দিল। হাসি পেল...রক্তের বিনিময়ে খাদ্য...

এক্তা স্টিকার পেলাম..."first time donor"

আমি মাকে বলি, কি যে ঘাঢ়!! এক্তু কালচে ধরনের। পাতলা না, মা বলে যে ঘাঢ় রক্ত নাকি ভালোনা!!! আমি শুনে অবাক।

No comments:

Post a Comment

নিজের মতামত প্রকাশ করলে ভাল লাগবে। ধন্যবাদ!